![]() |
Kiser Tore Oshru Jhare (বন্ধু , কিসের তরে অশ্রু ঝরে, কিসের লাগি দীর্ঘশ্বাস) - Rabindra Sangeet |
বন্ধু , কিসের তরে অশ্রু ঝরে, কিসের লাগি দীর্ঘশ্বাস।
হাস্যমুখে অদৃষ্টেরে করব মােরা পরিহাস।
রিক্ত যারা সর্বহারা সর্বজয়ী বিশ্বে তারা,
গর্বময়ী ভাগ্যদেবীর নয়কো তারা ক্রীতদাস।
হাস্যমুখে অদৃষ্টেরে করব মোেরা পরিহাস॥
আমরা সুখের স্ফীত বুকের ছায়ার তলে নাহি চরি
আমরা দুখের বক্র মুখের চক্র দেখে ভয় না করি।
ভগ্ন ঢাকে যথাসাধ্য বাজিয়ে যাব জয়বাদ্য,
ছিন্ন আশার ধ্বজা তুলে ভিন্ন করব নীলাকাশ।
হাস্যমুখে অদৃষ্টেরে করব মােরা পরিহাস ৷
হে অলক্ষ্মী, রুক্ষকেশী, তুমি দেবী অচঞ্চলা।
তােমার রীতি সরল অতি, নাহি জানাে ছলাকলা।
জ্বালাও পেটে অগ্নিকণা নাইকো তাহে প্রতারণা
টানাে যখন মরণ-ফাঁসি বল নাকো মিষ্টিভাষ।
হাস্যমুখে অদৃষ্টেরে করব মােরা পরিহাস ৷
ধরার যারা সেরা সেরা মানুষ তারা তােমার ঘরে।
তাদের কঠিন শয্যাখানি তাই পেতেছ মোদের তরে।
আমরা বরপুত্র তব যাহাই দিবে তাহাই লব,
তােমায় দিব ধন্যধ্বনি মাথায় বহি সর্বনাশ।
হাস্যমুখে অদৃষ্টেরে করব মােরা পরিহাস ৷
যৌবরাজ্যে বসিয়ে দে মা, লক্ষ্মীছাড়ার সিংহাসনে।
ভাঙা কুলােয় করুক পাখা তােমার যত ভূত্যগণে।
দগ্ধ ভালে প্রলয়শিখা দিক্ মা, এঁকে তােমার টিকা,
পরাও সজ্জা লজ্জাহারা জীর্ণকন্থা ছিন্নবাস।
হাস্যমুখে অদৃষ্টেরে করব মােরা পরিহাস॥
লুকোক তােমার ডঙ্কা শুনে কপট সখার শূন্য হাসি।
পালাক ছুটে পুচ্ছ তুলে মিথ্যে চাটু মক্কা-কাশী।
আত্মপরের-প্রভেদ-ভােলা জীর্ণ দুয়াের নিত্য খালা,
থাকবে তুমি থাকব আমি সমানভাবে বারো মাস।
হাস্যমুখে অদৃষ্টেরে করব মােরা পরিহাস ৷
শঙ্কা-তরাস লজ্জা-শরম চুকিয়ে দিলেম স্তুতি-নিন্দে।
ধুলাে সে তাের পায়ের ধুলাে তাই মেখেছি ভক্তবৃন্দে।
আশারে কই, ঠাকুরানী, তােমার খেলা অনেক জানি,
যাহার ভাগ্যে সকল ফাঁকি তারেও ফাঁকি দিতে চাস
হাস্যমুখে অদৃষ্টেরে করব মােরা পরিহাস ৷
মৃত্যু যেদিন বলবে 'জাগাে, প্রভাত হল তােমার রাতি
নিবিয়ে যাব আমার ঘরের চন্দ্র সূর্য দুটো বাতি।
আমরা দোঁহে ঘেঁষাঘেঁষি চিরদিনের প্রতিবেশী,
বন্ধুভাবে কণ্ঠে সে মাের জড়িয়ে দেবে বাহুপাশ
বিদায়কালে অদৃষ্টেরে করে যাব পরিহাস ॥